মোঃ ছিদ্দিক, ভোলা প্রতিনিধি: ভোলা দৌলতখানে সন্তান প্রসবের ১ ঘণ্টা পর এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সাদিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সমাজকর্ম পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।
সাদিয়া আক্তার উপজেলার আলী আশরাফ কলেজের শিক্ষার্থী। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসব তাকে পরীক্ষা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি। জানা যায়,সাদিয়া আক্তার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ সালাউদ্দিন কাজির মেয়ে। এস.এস.সি পরীক্ষায় পাস করার পর উপজেলার একই গ্রামের মেহেদি হাসান নামের একজনের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থেকেই সে পড়াশুনা করে।
মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাদিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হয়ে বাবার বাড়িতেই সন্তান প্রসব হয়। পরে স্বাভাবিকভাবে সাদিয়া ছেলে সন্তানের মা হয়। সকাল ৯টায় একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে সাদিয়া তার মা এইচ.এস.সি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। শিক্ষকেরা জানান,
সে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন। আলী আসরাফ কলেজের প্রভাষক মোঃ মিরাজুর রহমান জানান, মেয়েটি ভালো ছাত্রী। ইন্টার প্রথম বর্ষে ভর্তির পর বিয়ে হয়। অন্যান্য মেয়ের মতো নিয়মিত ক্লাস করেছে। সে দমে যায়নি। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসব এসব বাধা তাকে থামাতে পারেনি। সে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে।
দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব গোবিন্দ প্রোসাদ সরকার জানান, পরীক্ষা চলাকালে আমি মেয়েটির খোঁজ নিয়েছি। সে খুব সাহসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ বিষয়ে দৌলতখান উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন,
বিষয়টি জানার পর আমি মেয়েটি যাতে ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই উপজেলায় প্রায় শতাধিক মেয়ের বাল্যবিবাহ হয়েছে। সদ্য সন্তান প্রসবের কারণে সাদিয়ার পরিবার থেকে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সবধরের সহযোগিতা করেছে। সাদিয়ার মায়ের একান্ত প্রচেষ্টায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় তিনি সাদিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।